ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধিঃ সিলেটের সীমান্তবর্তী প্রবাসী অধ্যুষিত ওসমানীনগরের খাদিমপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার ও দীর্ঘদিনের ভূমি বিরোধ ঘিরে ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের অর্থদাতা হিসেবে পরিচিত গোলাম রব্বানী সুহেল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও সুহেল তার অনুসারী ও ক্যাডার বাহিনী দিয়ে এলাকায় বারবার অস্ত্রের মহড়া চালিয়ে গ্রামবাসীকে ত্রাসের মধ্যে রাখছেন। এর আগে বিভিন্ন সময় সুহেলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হলেও অজ্ঞাত কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
গত ১২ জুন, একটি মানহানিকর ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ার করার জেরে গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসীর দাবি, ভিডিওটি পরিকল্পিতভাবে ভাইরাল করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিলেন সুহেল নিজেই। ঘটনার পরপরই সুহেলের বাড়িতে বিপুল অস্ত্রধারী ভাড়াটে সন্ত্রাসী জড়ো করা হয়। পরবর্তীতে উত্তেজিত গ্রামবাসী তার বাড়ি ঘেরাও করে ১১ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসীকে আটক করে।
পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও অভিযুক্তদের বদলে বরং গ্রামবাসীর কয়েকজন প্রতিনিধি, সাবেক ইউপি সদস্য ও যুক্তরাজ্য প্রবাসীসহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মামলা রুজু করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে যুবদলের এক নেতা আহবাবুল হোসাইনকে অপপ্রচারের মাধ্যমে অভিযুক্ত করা হয় এবং কোন কারণ দর্শানো ছাড়াই বহিষ্কার করা হয়। এতে দলটির ভেতরে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, হাজেরা আলী পান্নার জমি দখল ও চাঁদাবাজির মামলায় অভিযুক্ত সুহেলকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে সিলেটের ডিআইজি ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান পিপিএম বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গোলাম রব্বানী সুহেলের আগের মামলাগুলো তদন্তাধীন।”
পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান জানান, “লিখিত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় থানার অফিসার ইনচার্জের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।”
এদিকে, সুহেল দাবি করেছেন, তিনি ভিডিওর নিচে সচেতনতা মূলক মন্তব্য করেছিলেন মাত্র। কিন্তু সেটিকে ঘিরেই ষড়যন্ত্রমূলক হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
খাদিমপুরের সাধারণ মানুষ এখন প্রশ্ন তুলছেন—“আইনের শাসন কি শুধুই দুর্বলদের জন্য?” তারা সুহেল ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা চাচ্ছেন।