বালাগঞ্জ (সিলেট) থেকেঃ চারপাশে যখন উন্নয়নের জোয়ার, তখন বালাগঞ্জ থানার বোয়ালজুর ইউনিয়নের মোকবেলপুর গ্রাম যেন উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে শত যোজন দূরে! কারণ এখানকার একটি রাস্তা দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে পড়ে আছে চরম অবহেলা আর দুঃখ-বেদনার নিদর্শন হয়ে। স্থানীয়রা এই রাস্তার নাম দিয়েছেন—"চেয়ারম্যান ও এমপির উপহারে পাওয়া আমাদের ছোট্ট নদী!"
এই সড়কের অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে, হালকা বৃষ্টিতেই জমে যায় হাঁটুসমান পানি। কাদা-পানিতে চলাচল একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়ে। রোগী নিয়ে বের হলে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে মূল রাস্তায় গিয়ে তবেই কোনো যানবাহনে ওঠা সম্ভব হয়।
২০২৪ সালের শুরুতে যেন এক আশার আলো জ্বলে। রাস্তার জন্য বিল পাশ হয়, সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব এসে ঘটা করে উদ্বোধন করেন। খনন কাজ শুরু হয়, সড়কে চলে কিছুদিনের কর্মযজ্ঞ। কিন্তু এরপরই ‘নদী বানানোর’ দায়িত্ব বুঝে নিয়ে হাওয়া হয়ে যান কন্ট্রাক্টর!
রাস্তা খুঁড়ে খুঁড়ে রেখে যাওয়ার পর আজও মেলেনি কোনো সমাধান, নেই কোনো তদারকি।
স্থানীয় এক বৃদ্ধ হতাশ গলায় বললেন— “আগে খারাপ ছিল, এখন তো আরও ভয়াবহ! গর্তে পরে পা মচকে যায়, কাঁদা ছিটে শরীর ভিজে যায়, এমপি-চেয়ারম্যান তো শুধু উদ্বোধন করতে জানে, খোঁজ নেয় কে?”
ছাত্রছাত্রীদের দুর্ভোগ যেন বর্ণনার বাইরে! বর্ষাকালে স্কুল-কলেজে যাওয়া মানে রীতিমতো যুদ্ধ। এক ছাত্রী বলেন— “জুতা হাতে নিয়ে হাঁটতে হয়, কখন পড়ে যাই ভয় হয়। আমরা কি দেশের নাগরিক না?”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উন্নয়নের নামে আশ্বাস আর ফাঁকা বক্তৃতা ছাড়া কিছুই জোটেনি। তারা প্রশ্ন তুলেছেন— “রাস্তা কেটে নদী বানিয়ে গেল যে কন্ট্রাক্টর, তার জবাবদিহি কে নেবে?”
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, অবিলম্বে এই রাস্তার কাজ শেষ করে জনগণের চলাচলের উপযোগী করে তোলা হোক। নইলে এই রাস্তা থেকে একদিন লাশবাহী গাড়ি ঘুরে যাবে— আর তার দায় কেউ নেবে না!
