সিলেট ট্রিবিউন ডেস্কঃ চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রোববার (৯ জুন) দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের (TG-339) একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
জানা গেছে, রাত ১টা ৪৫ মিনিটে হুইলচেয়ারে করে তাকে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে নেওয়া হয়। সেখানেই তাকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা যায়। পরে রাত প্রায় ৩টার দিকে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। এ সময় তার পরনে ছিল সাধারণ লুঙ্গি ও শার্ট, যা উপস্থিত অনেকের নজর কাড়ে।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব থেকে অবসর নেওয়ার পর মে মাসের শুরুতে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড গমন করেন আবদুল হামিদ। তার সঙ্গে ছিলেন ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার ও শ্যালক ডা. আ ন ম নৌশাদ খান। দেশের চিকিৎসকদের পরামর্শেই তিনি থাইল্যান্ডে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
তবে তার এই বিদেশ যাত্রা ঘিরে দেশজুড়ে শুরু হয় জোর আলোচনা। সাবেক একজন রাষ্ট্রপতির এমনভাবে দেশত্যাগের ঘটনায় প্রশ্ন তোলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মহল। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে গঠন করা হয় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি, যারা তার বিদেশ যাত্রায় সহায়তাকারীদের শনাক্তে কাজ শুরু করে।
এর আগে ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদসহ মোট ১২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই তার বিদেশ যাত্রা রাজনৈতিকভাবে নতুন মাত্রা যোগ করে।
তথ্য অনুযায়ী, আবদুল হামিদ ২০১৩ ও ২০১৮ সালে টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্ব হস্তান্তরের পর তিনি রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকায় ব্যক্তিগত বাসায় বসবাস শুরু করেন।
এদিকে, সাবেক এই রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগের ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া দিনদিন তীব্র হয়। এনসিপির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে হাজারো মানুষ যমুনার তীরে বিক্ষোভ করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানায়। এরপর সরকার নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগের সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে, যা দেশের রাজনীতিতে বিরল ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।